আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত লালমনিরহাট। ইতিমধ্যে বাজারে শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করেছে এবং নতুন করে সবজি চাষে পুরোদমে ব্যস্ত রয়েছেন কৃষকরা। তবে এ জেলার কৃষকরা প্রতিনিয়ত পাইকারি বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে জিম্মি। ফলে হাত বদলে বাড়ে সবজির দাম। কৃষকের ক্ষেত থেকে সবজি যায় পাইকারি বাজার, পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে সবজির দামের ব্যবধান হয় আকাশ-পাতাল। চাষী পর্যায় থেকে পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাচ্ছে দ্বিগুণ আর খুচরা বাজারে থেকে ভোক্তাদের কিনতে হচ্ছে তা তিনগুণ দামে।
চাষীদের অভিযোগ, ন্যায্য মূল্যে শাক-সবজি বিক্রি করতে না পারায় তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে প্রতি মৌসুমেই। লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলাে ৪৫টি ইউনিয়ন, ২টি (লালমনিরহাট, পাটগ্রাম) পৌরসভায় সবচেয়ে বেশি সবজি চাষ হয়। বেগুন, করলা, শসা, বরবটি, চিচিঙ্গা, ঝিঙা, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, লালশাক, ডাটাশাক, কচু, আলু, ঢেঁড়স, পেঁপে, মুলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, মরিচসহ বিভিন্ন প্রকারের সবজি চাষ হয়। উৎপাদিত সবজি লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ী, লালমনিরহাট পৌরসভার গোশালা বাজার, আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়নের কুমড়িরহাট পাইকারি বাজারে বিক্রি করে থাকেন কৃষকরা। ভরা মৌসুমে পাইকারি ক্রেতারা স্থানীয় বিভিন্ন বাজার থেকে প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪০ ট্রাক শাক-সবজি কিনে রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, সিলেট, ফেনী, রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর জেলায় পাঠাচ্ছেন। লালমনিরহাট জেলার শাক-সবজি এসব জেলার মানুষের চাহিদা পূরণ করে।
বড়বাড়ী, কুমড়িরহাট, গোশালা বাজার পাইকারি সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সকালে প্রতিদিন আশপাশের গ্রাম থেকে সবজি চাষিরা সাইকেল, ঠেলাগাড়ি, ভ্যান, রিকশা, অটোরিক্সায় বিভিন্ন ধরনের সবজি নিয়ে আসছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে ক্রেতা ও বিক্রতার সংখ্যা বাড়তে থাকে।
নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক সবজি চাষি বলেন, পাইকারি ক্রেতারা স্থানীয় দালালদের সঙ্গে বাজার বসার আগেই আলোচনা করে একটা দাম ঠিক করে নেন। সেই দামেই পাইকাররা বাজার থেকে সবজি কেনেন। সিন্ডিকেটের কারণে শেষ পর্যন্ত লোকসান দিয়েই সবজি বিক্রি করতে হয়।
আরও বলেন, আমরা কৃষক মানুষ। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কষ্ট করে সবজি উৎপাদন করি ঠিকই, কিন্তু বাজারে সঠিক দাম পাই না।